
নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরে আগামীকাল সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে মাঠে নামছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। পোশাক গায়ে দিয়েই দায়িত্ব পালন করবেন তারা। আর তাদের সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করবেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনসে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় এ কথা জানান নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
পুলিশ কমিশনার বলেন, আগামীকাল থেকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্টে আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সঙ্গে প্রতিটি পয়েন্টে থাকবেন একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। প্রথমদিকে আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, ওয়াসা, লালখানবাজার ও আগ্রাবাদ এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। প্রয়োজন হলে নিউমার্কেট এলাকায়ও সমন্বয় করা হবে।
তিনি বলেন, আমি রাস্তাঘাটে আসতে যেতে দেখছি আসলে আমাদের শিক্ষার্থীরা কি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। তাদের এ উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে। তবে আমার তাদের এ কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক বিষয়ক ট্রেইনিং করানো হবে জানিয়ে কমিশনার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক বিষয়ক কিছু ট্রেইনিং করাবো। আর একটি কথা, কোনোভাবেই যেন কোনো কুচক্রীমহল সুবিধা নিতে না পারে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কাল থেকে আমরা পোশাকে বের হবো। তখন যদি তোমরা আমাকে ধাওয়া করো, তাহলে কিন্তু আমি চলে যাবো। গত পরশুও এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- এসব শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। এসব বিষয়ে খুব সাবধান হতে হবে।
নগরের প্রতিটি থানায় নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি করা হবে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার প্রত্যেকটি থানায় নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি করা হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকার গণ্যমান্যরাসহ ছাত্র প্রতিনিধিরাও থাকবে। আর এই কাজটি ছাত্ররাই করবে, তাহলে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকবে না। আর সংশ্লিষ্ট থানা কমিটির সদস্যদের কাছে আমাদের ঐ এলাকার কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে। যাতে তারা সমন্বয় করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের থানায় থানায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের থানায় থানায় যেতে হবে। না হলে কর্মরত সদস্যদের ভয় কাটবে না। আমাদের পুলিশ সদস্যদের অধিকাংশদের বয়সই তোমাদের চেয়ে বেশি। আমি তাদের সবাইকে বলেছি শিক্ষার্থীরা কোনো নাশকতা করেনি। সুতরাং তাদেরকে অভয় দিবে তোমরা।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।
তিনি বলেন, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়—এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিও থাকবে। প্রয়োজনে স্থান বাড়ানো হবে। প্রতিটি থানায় দল গঠন করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে। পুলিশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে শিক্ষার্থীরা।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আ স ম মাহতাব উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) আবদুল মান্নান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহাম্মদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদি উর জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান প্রমুখ।