নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পতনের পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং ৫টি সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সিটি কর্পোরেশনের দেওয়া এক তালিকায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
তালিকা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাঁচটি ওয়ার্ডে। যার মধ্যে দুই ওয়ার্ডের আর্থিক ক্ষতি টাকার অংকে দেড় কোটির বেশি। এর বাইরে ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর কিংবা কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। যদিও সংরক্ষিত ওয়ার্ডসহ ১৪টি ওয়ার্ড থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড এবং ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে। এ দুইটি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেড় কোটি এবং ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের ১ কোটি ৫৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ড , ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের ক্ষতি ২৫ লাখ টাকা করে। ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকা। বাকি ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ১০ লাখ টাকার, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে ৫ লাখ, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে ৫ লাখ টাকার, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে সাড়ে ৩ লাখ, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ২ লাখ, ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে ২ লাখ, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে ২ লাখ ১০ হাজার, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে ২ লাখ ৩৫ হাজার এবং ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে দেড় লাখ টাকার। এর বাইরে ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ড, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ড, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড, ৩ ও ৭ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এক লাখ টাকা করে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ৫ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার।
অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ২ নম্বর জালালাবাদ, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ২২ নম্বর এনায়েতবাজার, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩৫ নম্বর বক্সির হাট, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এবং ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ গড়ে ১ লাখ টাকার কম।
সরকার পতনের দিন অন্যান্য ওয়ার্ডে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর কিংবা কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে, ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী, ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ি, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার এবং ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর।
সিটি কর্পোরেশনের তালিকা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাঁচটি ওয়ার্ডে।
সিটি কর্পোরেশনের তালিকা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাঁচটি ওয়ার্ডে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের এই কার্যক্রমে ১৪টি ওয়ার্ড থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে ৫টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং বাকি ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড। সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ নম্বর মোহরা, ৮ নম্বর শুলকবহর, ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর এবং ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ১, ২, ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সচিবালয় বিভাগ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। চেষ্টা থাকবে দ্রুত সংস্কার করার। কিছু কিছু ওয়ার্ডের অবস্থা বেশি বেহাল। তবে নাগরিক সেবা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।