নিউজ ডেস্ক: হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, ‘যেভাবে চিন্তা করেন না কেনো, হয়ত আমার জেদ হয়ে বসেছে। এই আসন বিএনপির হাতে ফেরত দিতে হবে আমাদের। নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দিবে কি দিবে না, ওটা পরোয়া করি না।’
আওয়ামী লীগ সামনের সপ্তাহে রাঙ্গুনিয়ায় মিছিল বের করতে পারে বলে একটি ম্যাসেজ দেখলাম। আওয়ামী লীগ মিছিল বের করলে দৌঁড়ানোর দায়িত্ব আপনাদের। এরপর যদি মামলা হয়, তার প্রথম আসামি যেনো আমাকে করা হয়, এতে আমার গর্ববোধ হবে। আওয়ামী লীগকে পিঠানোর মামলার এক নাম্বার আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন-নির্যাতন ১৬ বছর সহ্য করেছি। এখন নির্যাতনের সময় শেষ। আওয়ামী লীগের কোন মাফ নাই।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া সাহাব্দিনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে দুপুরের পর থেকেই ইউনিয়ন ও আশেপাশের এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ লোকসমাগম হয় মাঠে। বিকেলের দিকে হুম্মাম কাদের চৌধুরী যখন সভাস্থলে যোগ দেন, তখন দলীয় নেতৃবৃন্দের মিছিল—স্লোগানে আশেপাশের এলাকা প্রকম্পীত হয়ে ওঠে।
বক্তব্যে তাঁর বাবা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার বাবা দুই আসন থেকে নির্বাচন করার যখন সিদ্ধান্ত নেন, তখন আমার বাবার খুব ঘনিষ্ট একজন ব্যক্তি এসে বলল, ভাইজান ছেলের তো বয়স হয়ে গিয়েছে ছেলেকে নামায় দেন। একটা আসনে আপনি করেন, দ্বিতীয়টিতে আপনার ছেলেকে দেন। তখন আমার বাবা হেসে বলেন, যেদিন এলাকার মানুষ ঘরে ঢুকে আমার ছেলেকে টাইনে বের করে বলবে, এখন আপনি নেতৃত্ব দেন, সেদিন আমার ছেলে নেতা হবে, তার আগে হবে না। আশাকরি নির্বাচনের আগে আগে আপনারা আমার বাড়িতে আসবেন আমাকে টেনেহিঁচড়ে বের করবেন, আর নেতৃত্ব আমার হাতে তুলে দিবেন।’
আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতনের বিষয় উল্লেখ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, আমার পরিবারের উপর আওয়ামী লীগের যে নির্যাতন, তা সবাই জানেন। যে অত্যাচার আমি সহ্য করেছি, আমি নিজে ৭ মাস গুম ছিলাম। তবে আপনাদের উপর আওয়ামী লীগের যে নির্যাতন, তা ভুলে যায়নি। আপনাদের থেকে চাঁদা তুলা থেকে শুরু করে, আপনাদের ভাইদেরকে গুম করে দেয়া, মামলা-হামলা দেয়া, আপনাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করতে না দেয়া, সব নির্যাতন সহ্য করেছেন আপনারা।
অনেক নেতারা এসে বলবেন, এতোদিন ধৈর্য্য ধরেছেন, আর কয়েক মাস কিংবা আরও কিছু বছর ধর্য্য ধরেন। কিন্তুআমারে ক্ষমা করে দিবেন, মেজাজ গরম, রক্ত গরম। আওয়ামী লীগের কোন মাফ নাই।
চাঁদাবাজদের পুলিশে হস্তান্তর করার অনুরোধ জানিয়ে তিনে বলেন, যেই চাঁদাবাজি আগে আওয়ামী লীগ করতো, সেই চাঁদাবাজী এখন আমাদের কিছু চেনা—পরিচিত মানুষরা করছে। যারা এই চাঁদাবাজি করছে, তাদের ধরিয়ে দেয়ার এবং চিহ্নিত করার দায়িত্ব আপনাদের। রাঙ্গুনিয়ার মাঠিতে কোন চাঁদাবাজ যদি খুঁজে পাওয়া যায় তাদেরকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে দিতে হবে।
মাদক প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, জানি না গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের মদদে কত মাদক ব্যবসায়ী রাঙ্গুনিয়ায় ডুকেছে। তবে আজকের পরে কোন মাদক ব্যবসায়ী যদি আমরা খুঁজে পায়, আল্লাহ হয়ত তাকে ক্ষমা করে দেবে, তবে আমরা ক্ষমা করবো না। মাদকের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।
ভোটের কথা উল্লেখ করে হুম্মাম বলেন, ‘জোয়ানদের চাইতেও আমার ভরসা মুরব্বীরা। আশা করি যখনই সময় আসবে, আমার জন্য আপনারা কাজ করবেন। তা করবেন তখনই, যখন আমি প্রমাণ করবো, আমি আপনাদের পাশে আছি। সামনের বছর দেড়েক সুযোগ দেবেন, আপনাদের খেদমত করার। আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর।
আশা করি প্রমাণ করতে পারবো, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হয়তো তার মতো লম্বা হয়নি, কিন্তু রাজনীতিতে তার মতো লম্বা হয়ে গেছে। আপনাদের নেতা হতে আসিনি, ভাই হতে এসেছি, আপনাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে দেখবেন, আপনাদের দুঃসময়ে আমি যেনো আপনাদের পাশে দাড়াতে পারি, সেই দোয়া কামনা করি।