নিউজ ডেস্ক: রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া সুখবিলাস বাটানা পাহাড় সার্বজনীন শালবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব ও ভদন্ত সুমনতিষ্য থের’র মহাথের বরণ উৎসব শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিনব্যাপী নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে।
এদিন ভোর থেকে বিশ্বশান্তি কামনায় মঙ্গলসূত্র পাঠ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান, সদ্ধর্মদেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
অর্জুন বড়ুয়ার প্রার্থনার মাধ্যমে ধর্মসভার অনুষ্ঠান কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রথম পর্বে ভদন্ত আলোক বাবু দেবাশীষ মুৎসুদ্দির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষ মহাসভার উপ-সংঘনায়ক রতনশ্রী মহাথের।
উদ্বোধক ছিলেন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুপম বড়ুয়া।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ যুব কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বিশ্ব বৌদ্ধ সৌভ্রাতৃত্ব সংঘ সহকারী মহাসচিব ব্রাহ্মাণ্ড প্রতাপ বড়ুয়া ।
প্রধান জ্ঞাতি ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, দানশীল ব্যক্তিত্ব টিপু বড়ুয়া ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষ মহাসভার উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি জ্ঞানানন্দন মহাথের। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাঙ্গালহালিয়া হেডম্যান পাড়া কেন্দ্রীয় বিহারের অধ্যক্ষ উ নাইন্দা ওয়াইনসা মহাথের। প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন বাঙ্গালহালিয়া নন্দবংশ আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বিদর্শনাচর্য নন্দবংশ মহাথের। সদ্ধর্মদেশক ছিলেন সুখবিলাস সদ্ধর্মদয় বিহারের অধ্যক্ষ সুগতবংশ থের,ফলহারিয়া সদ্ধর্মদয় বিহারের অধ্যক্ষ দেবময় থের, মহাবংশ আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক মহাবংশ থের,রমতিয়া জনকল্যাণ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ও শিয়ালবুক্কা মৈত্রি বিহারের অতুলানন্দ ভিক্ষু।
দ্বিতীয় পর্বে ভদন্ত আলোক পঞ্ঞা থেরোর সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঢলু পাড়া আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মো: শফিকুর রহমান। উদ্বোধক ছিলেন বিহার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি বাদল মুৎসুদ্দি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির অর্থ সম্পাদক রাহুল বড়ুয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুনিল বড়ুয়া ও সার্জেন্ট রিপন বড়ুয়া বিমান বাহিনী। স্বারক উম্মোচন করেন নুমনতিষ্য স্বারকের সম্পাদক আলোক পঞ্ঞা থেরো।
ধর্মদেশক ছিলেন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার সহকারী মহাসচিব, জ্ঞানবংশ মহাথের,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব করুণাশ্রী মহাথের ও চাঁন্দগাও সার্বজনীন আনন্দ বিহারের বোধশ্রী থের।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নজরুল ইসলাম, ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদোমং মারমা, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার এস আই রোপন বড়ুয়া। ও আরছ তালুকদার।
এসময় সামরিক ও বেসামরিক,পুলিশ ও সরকারী উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম সভায় আগত অতিথিরা বলেন-বাংলাদেশে প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান আজ সামাজিক সম্প্রীতির অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। তার আরো বলেন-গৌতম বুদ্ধের জীবনের অন্যতম ঐতিহাসিক কীর্তি হলো ভিক্ষুসংঘ প্রতিষ্ঠা।
এরকম সংঘ সদস্যরা সম্মানিত হলে আমরা আনন্দভোগ করি। মহাথের বরণ এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠান তেমনি একটি ঘটনা যা ভিক্ষুদের প্রাণীত করে এবং অধিকতর প্রত্যেয়ে বহুজন হিতায়, বহুজন সুখায়, আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের অধিকতর প্রত্যয়ে উৎসর্গ করেন।
আমরা এই পদে অভিসিক্ত শ্রদ্বেয় সুমনতিষ্য মহাথেরকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ভদন্ত সুমনতিষ্য থেরকে অভিধা প্রদানের মাধ্যমে মহাথের হিসাবে বরণ করেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভা এবং দায়ক সংঘের পক্ষ থেকেও সংবর্ধিত করা হয়।