নিউজ ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা বৌদ্ধ, মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান একসাথে এদেশে বসবাস করি। আমরা একটি পরিবারের মতো। আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই; কোনো পার্থক্য নেই। আমরা ধর্মপ্রাণ হবো, তবে ধর্মান্ধ হবো না।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতুলী এলাকার শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ দেব মন্দির এবং গোগ্রামস্থ শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গা মন্দির পরিদর্শন ও দরিদ্রদের মাঝে সহায়তা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আগামী মাসে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। আপনারা যেন নির্বিঘ্নে যথাযোগ্য ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে পুজা উদযাপন করতে পারেন এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আমি আপনাদেরকে আশ্বাস দিচ্ছি। কেউ যদি উপাসনালয়ে, পুজা-মন্ডপে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আমরা তাদেকে কঠোর হস্তে দমন করবো। আসন্ন দুর্গোৎসবকে নিয়ে মঙ্গলবারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের একটি সভা আছে। পুজা মন্ডপে বা এর বাইরে পূণ্যার্থীদেরকে যারা হয়রানি করবে আমরা তাদেরকে ছাড় দেবো না। আইনের আওতায় এনে তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবো।
রাজশাহীতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে শান্তি বিরাজ করছে এটা জেনে ভালো লাগলো। কোথাও যদি আপনারা বিশৃঙ্খলার আশংকা করেন তাহলে স্থানীয় লোকজন সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবেন। আর আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে বলে দিয়েছি যে মন্দিরগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে আপনারা মনে করেন সেগুলোতে মাদ্রাসার ছাত্ররা পালাক্রমে পাহারা দেবে। তাহলে দুর্বৃত্তরা আমাদের ধর্মীয় উৎসব পালনে বাধা দিতে পারবে না।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন ধর্মের জন্য পৃথক পৃথক কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ড আছে যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদ্যাপনের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়। আগের সরকার হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে ২-৩ কোটি টাকা দুর্গোৎসব উদ্যাপনের অনুদান প্রদান করতো। এবার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনে মাধ্যমে আমরা এগুলো প্রদান করবো। বৌদ্ধদের প্রবারণা ও খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসবেও অনুদান প্রদান করা হবে। এক কথায়, আমরা আপনাদের সাথে আছি, আপনারাও আমাদের পাশে থাকবেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নদওয়াতুল ক্বওমী মাদ্রাসার পরিচালক মওলানা মোঃ মোখতার আলী, শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ দেব মন্দিরের সভাপতি বিদ্যুৎ নারায়ণ সরকার, ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বক্তৃতা করেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সুধীজনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, অনুষ্ঠান শেষে দরিদ্রদের মাঝে ৫০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। প্রতি প্যাকেটে ছিল ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ ও ৪ কেজি আলু।