
নিউজ ডেস্ক:রাঙ্গুনিয়া সরফভাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কেটে মার্কেট নির্মাণের প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রী, অভিভাবক, মেহেরিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সরফভাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন,গাছ কাটলে পরিবেশ ধ্বংস, পাহাড় কাটলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট, এবং চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কর্তৃক গাছ বাগান ধ্বংসকারীর বিচার ও আমরা মার্কেট চাই না এবং মার্কেট নির্মাণ বন্ধের শ্লোগানে একাত্না ঘোষনা করে বক্তব্য রাখেন নুরুল আবছার মেম্বার, মোজাম্মেল হোসেন মেম্বার, দিদার সওদাগর, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সোহেল ও মাওলানা রামু হুজুরসহ আরও অনেকে।
বক্তরা বলেন, গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়, আমরা নিশ্বাস ফেলি সবুজের মাঝে, গাছের শ্যামল সমারোহ অনন্য প্রকৃতি আমাদের মায়ার বন্ধনে জড়িয়েছেন।
১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রাইমারী স্কুল রাঙ্গুনিয়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ের চারপাশ জুড়ে সবুজের ছায়াবৃত উকি দিয়ে আমাদের ডাকে আলিঙ্গন করতে। সারিসারি গাছগুলো আমাদের অতি আপনজন। এখানে শীতের শিশির ভেজা সকাল কিংবা কুয়াশামাখা সন্ধ্যায় পুরো স্কুল জুড়েই মুখরিত হয়ে উঠে আশ্রয়ের খোঁজে আসা পরিযায়ী পাখির কলতান। এই গাছগুলো কাটার কারনে এখন শুধু নিঃশব্দতা।আজ আমরা দুঃখের ব্যাতিত ব্যাথার অশ্রুজলে। কোনদিন আর ডাকবেনা আমাদেরকে। আমরা প্রশাসনকে ধিক্কার জানাই। আমাদের পরিবেশ আমাদের ফিরিয়ে দিন। কথা গুলো বলেন কোমলমতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ আমাদের ২৭ জানুয়ারী এই মানববন্ধন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের জায়গাটি জেলা পরিষদের। এলাকাবাসী বলছে, ১১৮ বছর পূর্বে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৮০-৮৩ সালে নাকি স্কুল পরিচালনা কমিটির লাগানো শতাধিক গাছ ছিল এগুলো। যদিও স্কুল পরিচালনা কমিটি লাগানো শতাধিক গাছ এখন সরকারী সম্পত্তি। তবে তারা মনে করে সরকারি গাছ কাটতে গেলে উপজেলা পরিষদের রেজুলেশন, টেন্ডার ও বন বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখানে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। সীল স্বাক্ষর বিহীন একটি কাগজে দেখা গেছে ২৫টি পরিপক্ষ গাছ কাটার জন্য বিক্রির অনুমতি দেখানো হয়েছে। এলাকাসী বলছেন ইউএনও স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে গত ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ২.৩০টার গাছগুলো কর্তন করতে সাহায্য করেছে। ১৫% ভ্যাট, ৫% আয়কর সহ সর্বমোট ১লক্ষ ৩৬হাজার ৮শ টাকায় বিক্রি করা নিয়ে এলাকায় ধ্রুর্ম্যজাল সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ভূমি স্থিত ২৫টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করা হলে কিনেছেন স্থানীয় সাবেক মেম্বার মো. ইসমাইল হোসেন। এলাকাবাসীরা বলছেন গাছ রক্ষার জন্য যার ভূমিকা বেশি দরকার ছিল, কিন্তু সেখানে তিনিই মুখ্য ভুমিকা পালন করেছেন গাছ কাটার ক্ষেত্রে। তাই তিনি সকলের কাছে সমালোচনার পাত্র হলেন।
এ বিষয়ে গাছ ক্রয়কারী মো. ইসমাইল মেম্বার বলেন,আমি জেলা পরিষদের কাজ থেকে নিলামে কিনেছি, এখানে যদি বলেন, আপনি গাছ আর কাটবো না আমি সাথে সাথে গাছ কাটা বন্ধ করে দেব। কারন আমি এলাকার, আমি এলাকার স্বার্থে প্রশাসন বলা মাত্র যে ১২টি গাছ কেটেছি, তার বাহিরে আর একটাও কাটবোনা। আমি ইউএনও যা বলবেন তাহা করতে রাজি আছি। উল্লেখ্য, এই গাছ গুলো ১৯৮০-৮৩ সালে স্কুল কমিটির লাগানো। এ গাছ গুলোর বর্তমান বয়স প্রায় ৪০-৪৩ বছর।